দর্শনীয় স্থান সমুহ

ঐতিহাসিক স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ভিতরবন্দ রাজবাড়ী, উলিপুর মুন্সিবাড়ী, চিলমারী নদীবন্দর, ধামশ্রেণী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, উলিপুর জমিদার বাড়ী, কাজী মসজিদ, জিয়া পুকুর, চান্দামারী মসজিদ, মেকুরটারী মসজিদ, পাঙ্গা রাজবাড়ী, ঘড়িয়ালডাঙ্গা জমিদারবাড়ী, ধরলা সেতু, ভিতরবন্দ রাজবাড়ী, নাওডাঙ্গা জমিদার বাড়ী, দাসিয়ার ছড়া ছিটমহল, বঙ্গ সোনাহাট স্থলবন্দর, সোনাহাট রেলওয়ে ব্রীজ ইত্যাদি।উলিপুর মুন্সিবাড়ী :ইঙ্গ-ভারতীয় স্থাপত্যের নিদর্শন উলিপুরের মুন্সিবাড়ী।
এই প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন সম্পর্কে নানা উপাখ্যান ও লোকগাথা প্রচলিত আছে। উলিপুর জমিদার বাড়ী :১৮৮৪ থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত কৃষ্ণকান্ত নন্দীর স্ত্রী মহারানি স্বর্ণময়ী জমিদার হিসেবে জমিদারি পরিচালনা করেন। তার আমলেই ১৮৬০ সাল থেকে ১৮৬৮ সালের মধ্যে উলিপুরে উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরবর্তীতে তার নামে স্কুলটির নামকরণ করা হয় উলিপুর মহারানি স্বর্ণময়ী হাই ইংলিশ স্কুল। ধামশ্রেণী সিদ্ধেশ্বরী মন্দির :রানি সত্যবতী তার আমলে এই মন্দির নির্মাণ করেন। এখানে বৈশাখ মাস জুড়ে মেলা বসে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ আসেন পূজা অর্চনা করতে। গবিন্দজিউ নাট্য মন্দিরঃকাশীমবাজার এস্টেটের মহারাজা মনিন্দ চন্দ নন্দী এই মন্দিরটি নির্মাণ করেন। কাজী মসজিদ :উলিপুরের দলদলিয়া ইউনিয়নে এই মসজিদটিকে ঘিরে নানা কিংবদন্তী রয়েছে। প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন মনস্কামনা পূরণের প্রত্যয় নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণীর নারী-পুরুষ শিরনী (পায়েস, খিচুরীসহ নানা খাদ্যসামগ্রী) নিয়ে যান। চিলমারী নদীবন্দর :ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত। একসময় নদীবন্দর হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি ছিল। এখানে ভাসমান তেল ডিপো রয়েছে। চিলমারী অস্টমীর স্নান ও মেলা :সনাতন ধর্মাবলম্বীরা প্রতিবছর সর্বপাপক্ষয়ে পুণর্ব্বসুনক্ষত্রযুক্ত বৃষ লগ্নে অষ্টমী তিথীতে পূণ্যস্নান করতে যান পাপমোচনের আশায়। ঐতিহাসিক পাঙ্গা রাজবাড়ি আলতাফ হোসেন সরকার কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কুচবিহার রাজা নর-নারায়ণের মৃত্যু হলে, পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষার্ধে অর্থাত্ মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে অনিরুদ্ধ অভিষেক করে, পাঙ্গা রাজ সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। এ কারণে অনিরুদ্ধ পাঙ্গা রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা। অপরদিকে প্রয়াত রাজ নর-নারায়ণের পুত্র লক্ষী নারায়ণ কুচবিহার রাজ্যের সিংহাসনে বসেন। কুচবিহারের কোচ রাজারা সপ্তম পুরুষ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার পরবর্তী দত্তক পুত্র বংশধরগণ কুচবিহার রাজ্য পরিচালনা করেন। বর্তমানে পাঙ্গা সীমান্তবর্তী কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা শহরের উত্তরে ৫ কিলোমিটার এবং ভারতের কুচবিহার হতে দক্ষিণে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাঙ্গা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা । উল্লেখ্য যে, পাঙ্গা রাজ্যটি প্রত্যন্ত মফঃস্বলে অবস্থিত থাকার কারণে তত্কালীন এই ক্ষুদ্র রাজ্যটির প্রতি অনেক ঐতিহাসিকের দৃষ্টি নিবদ্ধ হতে পারিনি। আর এ কারণেই পাঙ্গা রাজবংশের ইতিহাস সঠিক সন-তারিখ লিপিবদ্ধ পাওয়া যায়নি। ফলে পাঙ্গা রাজবংশের অনেক ঘটনা অপ্রকাশিত থেকে যায়। পাঙ্গা রাজত্বের শেষার্ধে রাজবাড়ীতে সিংহাসন নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্রের তুফান বইতে থাকে। ফলে পাঙ্গার হূত গৌরব আনয়ন সম্ভব হয়নি।